BCS (Textile) । বিসিএস (টেক্সটাইল)

জাতীয়
অর্থনীতিতে বাংলাদেশের বস্ত্র ও তৈরি পোশাক ইন্ডাস্ট্রির উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।
এই ইন্ডাস্ট্রি প্রায় ৫ মিলিয়ন লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছে, যার মধ্যে প্রায়
৮০% ই নারী (যাদের অধিকাংশই অশিক্ষিত কিংবা স্বল্প শিক্ষিত) এবং এতে করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের
মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাস করে জাতীয় অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেই চলেছে এই খাত।
তাছাড়া এই ইন্ডাস্ট্রির উপর নির্ভর করেই গড়ে উঠেছে আরো ছোট বড় নানান ধরনের ব্যবসা এবং
এসব ব্যবসাও অনেক মানুষের কর্মসংস্থান করছে। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে
বিশ্ব বাজারে নিজেদের শক্ত অবস্থান নিশ্চিত করে অনেকটা দাপটের সাথেই ব্যবসা করে আসছে। 

BCS in Textile

বর্তমানে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে ২য় স্থানে অবস্থান করছে,
ঠিক চীনের পরেই। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৪% -ই আসে এই বস্ত্র ও তৈরি পোশাক খাত
থেকে, যা কিনা দেশের জিডিপি (GDP) এর প্রায় ২০%। আপনারা ইতিমধ্যেই জানেন যে, ২০২১ সালের মধ্যে
বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা পাওয়ার
পরিকল্পনা করেছে এবং এই বস্ত্র ও তৈরি পোশাক খাতই হবে তার মূল চালিকা শক্তি।

চলমান
চাহিদা অনুধাবন করেই এই বিষয়ে শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রতি বছর অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। বর্তমানে
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়,
গাজীপুর প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
এবং
মাওলানা ভাসানি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাতটি (বুটেক্স ওয়েব সাইটের
তথ্য অনুসারে) অধিভূক্ত কলেজ সহ আরো অনেক গুলো বেসরকারি বা আধা-সরকারি ইন্সটিটিউট বা
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর প্রায় ৫০০০ জন বস্ত্র প্রকৌশলী বের হচ্ছে। এসব বস্ত্র
প্রকৌশলী অত্যন্ত দক্ষতার সাথেই বস্ত্র ও তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করে এগিয়ে নিচ্ছে
এই শিল্পকে। বেসরকারি এসব কারখানার পাশাপাশি অনেক সরকারি অনেক ক্ষেত্র রয়ে গেছে, যেখানে
বস্ত্র প্রকৌশলীদের একান্তই প্রয়োজন। অনেক ক্ষেত্রেই এসব পদে বিসিএস নন-ক্যাডার হিসেবে
বস্ত্র প্রকৌশলীদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। 

বিসিএস (স্বাস্থ্য), বিসিএস (ফিসারিজ), বিসিএস
(কৃষি)
, এবং বিসিএস (পশু-সম্পদ) এর মত বিসিএস (টেক্সটাইল) থাকাটা নিতান্তই যৌক্তিক
ও প্রাসঙ্গিক এবং সময়ের দাবিও বটে। 



দেশের অর্থনীতির মূল চালক যে সেক্টর, সে সেক্টরকে টিকিয়ে রাখতে কিংবা আরো সমৃদ্ধ করতে নীতি নির্ধারণীতেই জোর দিতে হবে। এতে করে “Leading from the front to the true direction” হবার সম্ভাবনা সুনিশ্চিত।  

হ্যাঁ,
চাইলেই যেকোন বিষয়ে বিসিএস ক্যাডার করা যায় না। তার জন্য ন্যূনতম কিছু শর্ত অবশ্যই
পূরণ করতে হয়। কোনও বিভাগের ক্যাডার হওয়ার জন্য কমপক্ষে ১০০ টি এন্ট্রি পোস্টের প্রয়োজন।
তবে ইতিমধ্যেই টেক্সটাইল বিভাগে ১৫০ টি প্রবেশ পোস্ট রয়েছে এবং বেশ কয়েকটি কলেজ ও
প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার চলমান প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে এটি প্রায় ২00 এ উন্নীত হতে পারে।
পর্যাপ্ত পদ থাকা সত্ত্বেও এগুলিকে বিসিএসে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না। বরং এই পদগুলিতে
এখনও নন-ক্যাডার পদ্ধতিতে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে যেসব পদে নন-ক্যাডার ভিত্তিতে
বস্ত্র প্রকৌশলীদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে তার সার-সংক্ষেপ নিচে দেয়া হলঃ

বর্তমানে এন্ট্রি লেভেলে যেসব পদে নন-ক্যাডার ভিত্তিতে
বস্ত্র প্রকৌশলীদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে
পদের নাম
গ্রেড
পদের সংখ্যা
সহকারী পরিচালক
৯ম গ্রেড
২১
প্রভাষক
৪৫
ফোরম্যান
২৯
ইন্সট্রাক্টর
৪৯
প্রভাষক (ফ্যাশন
ডিজাইন)
০৬
মোট
১৫০
মূল
কথা হল, বস্ত্র ও তৈরি পোশাক খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারক যদি একজন বস্ত্র প্রকৌশলী
না হন, তাহলে সেখান থেকে ভাল ফলাফল আশা করাটা অনেকটাই অযৌক্তিক।
Right
people at the right place
হতে হবে। 
বর্তমান কাঠামোতে,
যেসব জায়গায় যেমন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয়, শিল্প মন্ত্রনালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়,
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে বস্ত্র ও তৈরি পোশাক সংক্রান্ত কার্যাবলি রয়েছে, সেসব ক্ষেত্রে
বস্ত্র প্রকৌশলীদের ক্যাডার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। তাছাড়া, যেসব দেশের সাথে
বাংলাদেশ বস্ত্র ও তৈরি পোশাক ব্যবসা করে থাকে, ঐসব দেশের দূতাবাসে একজন (অন্তত পক্ষে)
বস্ত্র প্রকৌশলী নিয়োগ দেয়া যেতে পারে অনেকটা বিসিএস (ফরেন এফেয়ার্স) এর মত। এতে করে
ব্যবসায়িক নানান জটিলতা দূর হয়ে কূটনৈতিক সম্পর্কের মত একটা ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে
উঠবে এবং দ্বিপাক্ষিক নেগোশিয়েটর হিসেবেও কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
Texpedi.com

Leave a Comment